চিত্র ১:
ম্যাডাম আমি কিন্তু ভাত খুব কম খাই,তবুও ওজন কমে না- মিষ্টি মুখের মেডিকেল স্টুডেন্ট বলছিলো এ কথা,যাকে দেখে সহজে PCOS মনে হয় না
চিত্র ২:
সবাই ওজন কমাতে বলে ম্যাডাম,আমি এ জন্য বাসায় ট্রেড মিল কিনেছি,কিন্তু দৌড়াতে কষ্ট হয়।
চিত্র ৩:
জীমে যাই ম্যাডাম নিয়মিত। pcos support group এর সাথে যুক্ত আছি অনেকদিন। আমার হাজব্যান্ড বকে আমাকে,’ এতো মোটা তুমি,তবুও খাওয়া কমিয়ে শুকাতে পারো না।’
চিত্র ৪:
২৭ বছর বয়স,মুখের ত্বক বুড়িয়ে গেছে, ভীষণ শুষ্ক,রোমকূপ বড়ো হয়ে গেছে। এমন পলকা দেহ মনে হয় বাতাস লাগলেই পড়ে যাবে।বডি মেজারমেন্টে bust 30″, waist 34″ আর butt 34″.
তার PCOS সন্দেহ করছি এবং lifestyle modification লাগবে বলায় মেয়েটা রেগে গেলো।
চারটা ঘটনাই জীবন থেকে নেওয়া।
আমরা সবাই এটাই তো জানি,’ কম খেতে হয় আর বেশি বেশি exercise করতে হয়’ – সব জানার পরেও সমাধান কেন হয় না।
আমাদের চারপাশে এখন নানাবিধ খাবারের প্রাচুর্য- শত শত রেস্তোরাঁ, ইউটিউবে রেসিপি আর ফুড ভ্লগারদের আহম আহম শব্দে খাওয়া।
PCOS patient এর মন খাবারের কারাগারে বন্দী থাকে।তারা স্বাধীন ভাবে মনে শান্তি নিয়ে কিছু খেতেও পারেনা।
আসুন বুঝতে চেষ্টা করি প্রতিবন্ধকতাগুলো কী কী হতে পারে।
👉Confusion:
ডাক্তার এক কথা বলে তো nutritionist আরেক কথা বলে।
রীলসে বলে বাদাম আর বীজ খেলেই সমাধান।
Anonymous post এর উত্তরে বিভ্রান্তি আরো বেড়ে যায়।
আমাদের মন চায় একটা সহজ রাস্তা আবার সেটা পেলেও
সেটায় কাজ কতটুকু হবে তার আস্থা না পাওয়া।
👉Willpower
পরিবার,বন্ধু স্বজন এমনকি আমরাও ভাবি যে আমাদের ইচ্ছাশক্তির অভাবেই আমরা খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা।
অথচ আমরা সারাদিনে কত ধরণের কাজ করি,ট্রাফিক রুল ফলো করি- willpower এর অপেক্ষায় বসে থাকি কি!
👉Extreme self criticism
যেকোন ডায়েট plan আমরা সর্বোচ্চ সাত দিন ফলো করতে পারি।যখনি সুস্থ হওয়ার চেষ্টায় কিছু করতে যাই মনের ভিতর থেকে সহস্র কণ্ঠ ব্যাঙ্গাত্মক হাসি হাসে, আগের সব ব্যর্থতার স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে বলে,’ আবারো হেরে যাবে তুমি।’
👉Powerlessness
এক না বলা অসহায়ত্ব আমাদের ঘাড়ে চেপে বসে,দুর্বল স্বরে আমাদের আত্মা যেন বলতে থাকে,’ কেউ কি আছে এই ধরাধামে যে আমার দায়িত্ব নিবে? কোন ডাক্তার, কোন nutritionist, আমার মতোই কেউ যে এখন সুস্থ হয়েছে।
বলাই বাহুল্য মিলে না এমন কেউ।
নিজেকে গুটিয়ে নিতে নিতে আর লুকানোর জায়গাও পাওয়া যায়না।
এমন যদি হয় আমি নিজেই আমার নিজের জন্য লাগসই একটা Food RULES বানিয়ে নেই এবং সেটা ফলো করার উপায় তৈরি করি।
আমার নিজেকে আমার চেয়ে ভালো আর কে জানবে।মানুষ মাত্রই স্বাধীনচেতা,অন্যের নিয়মের শিকলে সে বাঁধা পড়তে চায় না।
Personal food policy দিয়ে উপরে বলা চারটা প্রতিবন্ধকতা থেকে উত্তরণ সম্ভব কেননা
✅ নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়া আনন্দ পাওয়া যায়
কী খাবো
কীভাবে খাবো
কার সাথে বসে খাবো
কখন খাবো
কেমন করে খাবো
✅ ইচ্ছাশক্তির কৌশলী প্রয়োগ
ইচ্ছাশক্তির উপর নির্ভর না করে কেন আমরা এমনটা করবো, করার পর কী অর্জন করবো সে বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা
বরং আমাদের পরিচালিত করতে পারে।
জাপানিজ মেথড ‘ কাইজেন’ প্রয়োগ করা যেতে পারে।Daily assignment এবং জার্নালিং সহজ এবং ফলপ্রসূ।
✅ খাবার,পরিবেশ,মানুষ – সবার সাথে আন্তঃসম্পর্কে মনোযোগী হওয়া এবং সৌহার্দপূর্ণ বন্ধন তৈরি করা।
আমরা Self criticism এর সাথে যুদ্ধ করতে ব্যআহার করবো Self compassion,আমাদের ফোবিয়া গুলো উদাসীন ভাবে নয় বরং নম্র দৃঢ়তা দিয়ে ঠিক করবো।
Paolo Coelho এর লেখা The alchemist এর বই এর লেসনগুলো কাজে লাগানো যায়।
We can achieve sustainable and permanent food solutions with kind discipline.
✅ প্রতিদিন Self affirmation এর চর্চা করা।আমি আমার সিদ্ধান্ত নিতে পারি,আমি তাই করতে পারি আমি যা চাই,আমার সুস্থতা নিয়ে আমার অনুভূতিকে আমি সম্মান করি- অন্যের ভাবনা অন্যের পকেটেই থাকুক।
Brain mastery কীভাবে PCOS patient এর stress management এ কাজ করে সেটা বলে শেষ করি।
খাবার এর সাথে আবেগ ও বিনোদন জড়িত অথচ খাবার কিন্তু আমাদের জ্বালানি বৈ তো নয়।পানসে জীবনে খাবার দিয়ে আমরা spice up করতে চাই।
সাথে আছে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা কিছু অভ্যাস যা ভাঙতে দিনে অন্তত ১০ মিনিট খরচ করতে হবে।
আমাদের মস্তিষ্কে আছে
Emotional limbic brain( আবেগ)
আর আছে Prefrontal cortex( বিবেগ)
প্রতিদিন সকালে উঠে যে সিদ্ধান্ত তা নিতে আমাদের সাহায্য করে এই Prefrontal cortex.তাকে দুর্বল করে দেয় emotional brain যার কাছে আছে অতীতের বিভিন্ন আনন্দের স্মৃতি যেমন মেহমান মিষ্টি এনেছিলো,পরীক্ষা পাশের মিষ্টি, বন্ধুদের আড্ডায় একসাথে মচমচে পাকোরা খাওয়া- এসবই refined ( অতি সরল) শর্করা জাতীয় খাবার যা PCOS এর জন্য ক্ষতিকর।
আমাদের Prefrontal cortex কিন্তু চাইলেও ওগুলো না শুনে পারে পরিকল্পনা ও কৌশলের মাধ্যমে এই চক্র ভাঙতে।
চলুন Prefrontal cortex এর সাথে একটু কথা বলে আসি-
⁉তুমি আজ কী খেতে চাও প্রিয়
⁉গতকাল কী খেয়েছিলে মনে করো তো একটু
⁉গতকালকের চেয়ে কি আজকের খাবারের গুণগত মান উন্নত করা যায়
⁉Refined,sugary,processed এর পরিবর্তে খাওয়ার কোন বিকল্প ভাবো তো
এবার ভাবুন তো যার বাদামে এলার্জি সে কি বাদাম খাবে যেখানে আর দশ জনে দেদারসে খায়।
তাহলে কেন refined food সবাই খেলে আমি তা ছাড়তে পারবো না।
আসুন আজ থেকে নিজের দায়িত্ব নিজেই নেই।আপনার পথ চলায় সঙ্গী করে নিতে পারেন Stress management এর অনলাইন ব্যাচ ‘ চিত্তভূমি ‘ এবং Strength training এর অনলাইন ব্যাচ ফাইটক্লাব।